২৯ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:২৩
মে’র শেষ দিকে শীত শেষ হতেনা হতেই চারিদিকে গ্রীস্মের ছুটির আমেজ।রুশীয়রা তাদের পরিবার পরিজন পোষা প্রানী আর লোটা কম্বল নিয়ে ছুটে যাচ্ছে গ্রাম সুমুদ্রতীরে বা পরবাসে।উদ্দেশ্য ছুটির পুরো সময়টা প্রকৃতির মাঝে নিজের মত করে উপভোগ করা।চারিদেকে লেগেছে উৎসবের রঙ। শুধু হোস্টেলে বসে স্মৃতির জাবর কেটে কার্ড খেলে অখন্ড অবসরে বিশ্রী একঘেয়ে নিরস দিনগুলো কোনরকমে অতিবাহিত করছি আমরা গুটিকতক প্রবাসী ছাত্র।হোস্টেলও পুরোটা খালি হয়ে গেছে-শুধুমাত্র যাদের কোন যাবার জায়গা নেই তারাই কোনমতে মুখ গুজে পড়ে আছে এই লোহা আর কংক্রিটের খাচার মধ্যে।এমন এক একঘেয়ে দুপুরে আমার রুমমেটের মঙ্গোলিয়ান বান্ধবী অনুরোধ করল নদীর ধারে রৌদ্রস্নানে যাবার জন্য। শুনেই আমি মুখ বিকৃত করলাম।এমনিতেই গায়ের যে রঙ তারপরে রৌদ্রস্নান করেলে দিনের আলোতেও কেউ খুজে পাবেনা।তারপরে সী বিচ হলেও কথা ছিল-ছ্যাঃ!নদীর পারে যাব সুর্যস্নান করতে?অন্য সবাই শুনেই পাগলের প্রলাপ বল পিঠটান দিল। ধরা খেলাম আমি। রুমমেটের অনুরোধ উপেক্ষা করলেও তার তামাটে বর্ণের রুপসী মঙ্গোলিয়ান বান্ধবীকে আর উপেক্ষা করতে পারলামনা -অনেক অনুরোধ উপরোধের পরে রাজী হলাম।ট্রাউজারের নীচে শর্টস আছে একখানা। উর্ধাঙ্গে টি শার্ট।রোদ্রে দগ্ধ না হলেও দু-য়েকটা ডুব দিয়ে নিতে ক্ষতি কি সেই ভেবে তোয়ালেটা নিয়ে নিলাম।মঙ্গোলীয়ান সেই মেয়ের লট বহর দেখে আমার চোখ চান্দিতে! আমি সেসব দেখেও না দেখার ভান করলাম। যাচ্ছি যে তাই ঢেড়-বোঝা টানতে রাজি নই। বিরস বদনে কিছুদুর ট্রামে ঠেঙ্গিয়ে বহুপথ হেটে নদীর তীরে পৌছুতেই আমার ভিমড়ি খাওয়ার দশা। এযে রুপকথার রাজ্যে এসে পড়লাম।ছোট্ট শীর্ন নদীর দুই তীরের সে দৃশ্য বর্ননা করার সাধ্যি আমার নেই। তবুও চেষ্টা করতে ক্ষতি তো নেই।সারা শহরের তাবৎ সুন্দরী ললনারা যে একানে এসে ভীড় করেছে। বরফে মোড়া সেই নদী এখন যেমন তার রুপ সৌন্দর্য বেহায়ার মত উন্মুক্ত করে দিয়ে মিষ্টি হেসে কুল কুল গুঞ্জন তুলে ধাবমান দুর সুমুদ্রে নিজেকে সমর্পন করার বাসনায়। ঠিক তেমনি এতদিন চামড়া ফার আর ভারি মোটা আচ্ছাদনের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে অতিক্ষুদ্র চোখ ধাধানো বহুরঙ্গা অর্ন্তবাস(যা আসলে সুইমিং কাস্ট্যুম নামে পরিচিত)পড়ে কেউ তার পশ্চাৎদেশ কেউ বক্ষদেশ উর্দ্ধমুখী করে অসীম নীল আকাশকে আহ্বান করছে তাদের তাদের সৌন্দর্য প্রানভরে অবলোকন করার জন্য। কেউ কেউ এত ক্ষুদ্রকায় বস্ত্রখন্ড পরিধান করিয়া নিজেকে সর্বসম্মুখে মেলিয়া ধরিয়াছে যে যাহা দেখিয়া আমার মত ভেতো নির্লজ্জ বাঙ্গালীরও চক্ষু অবনমিত করিতে বাধ্য হইল।কি করব ভাই টিভি সিনেমাতে দেখেছি মাঝে মধ্যে কিন্তু চর্ম চক্ষুতে তো এই প্রথমবার দেখা-তাছাড়া বয়েসও ছিল তখন নেহায়েত কম তাই একটু লজ্জা পেয়েছিলামআমার সেই বন্ধুর বান্ধবী আমাদের দুজনকে হাত ধরে হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে চলল সেই ললনাদের পাশ ঘেষে এক্রোবেটিক স্টাইলে।কিছুদুর এগুতেই খালি একটা জায়গা পেয়েই ব্যাগ থেকে প্রমান সাইজের তোয়ালে বের করে বিছিয়ে দিল।পরক্ষনেই কোন কথা নেই বার্তা নেই ধুম করে উদোম করে ফেলল নিজেকে(আমি ভেবেছিলাম পোষাকটা সে এইখানেই পাল্টাবে কিন্তু আগেই বলেছি নাদান বুদ্ধু ছিলাম আমি তখন জানব কি করে ঘর থেকই এরা সুইমিং কাস্ট্যুম খানা ভিতরে পড়ে আসে)।আমি আড় চোখে এক লহমায় দেখে নিয়েছি চেঙ্গিস খান আর হালাকু খান এর বংশধর এই বাদামী রঙ্গের মেয়েটা চাবুকের মত দেহবল্লভী।রোদের আলো যেন পিছলে গেল তার মসৃন ত্বকে স্কিড করে।পরক্ষনেই তাকালাম আমার রুমমেটের দিকে- দেখি সে চোখে করুন আর্তনাদ! যৎ দেশ তদাচার অথবা তুমি যখন রোমে যাবে তখন চেস্টা করবে খাটি রোমান হতে।এইসব বাণীতো বহুবার শুনেছি কিন্তু আমার এই আধা কালা নধর কান্তি শরিরখানা ওদের সামনে উদোম করি কোন সাহসে।রুশ মেয়রা গড় পড়তা সবাই সুন্দরী-আর এদের ফিগার আঃ! এক নজরে ভীমরতি খেতে হয়। সবাই স্কেটিং আর ব্যালে নেচে পনের যেতে না যেতেই শরির করে,ছুরির ফলার মত সেকি তীক্ষ্ন ধার!অবশ্য ৩০ পেরুতে না পেরুতেই অধিকাংশ বুড়িয়ে কিংবা মুটিয়ে যায়।মেয়েদের কথা ছেড়েই দিলাম সংখ্যায় নগন্য হলেও পুরুষদের সংখ্যাও কম নয় এখানে। আঠারো বছর বয়সেই ওদের বাধ্যতামুলক আর্মি ট্রেনিং নিতে হয়। দু-বছর ট্রেনিং শেষে খালি গায়ে দাড়ালে মনে হবে প্রস্তর মুর্তি। এদের সামনে নিজের অসহায় লাগছে!এতগুলো শ্বেতশুভ্র ধবল বকের মাঝে আমরা দুই কানি বক অনেকেই আড় চোখে ঘুরে ফিরে আমাদেরকে দেখছে।নিজেকে আজব জন্তু মনে হচ্ছিল- ওরা গেয়ো ভাবতে পারে সেই ভেবে অবশেষে শুধু ট্রাউজারখানি খুলে ঠ্যাং দুখানি বের করেও শান্তি পেলামনা। শর্টস খানা এমনিতেই হাটু ছাড়িয়ে গেছে তার পরেও আরো নীচের দিকে টানছি।ভাগ্য ভাল যে রোদের তেজ তেমন ছিলনা-আকাশে আবার মেঘের আনাগোনা।লাজ শরম তখন ভেঙ্গেছে কিছুটা,.উপুড় হয়ে শুয়ে আড়চোখে ইতি উতি তাকাচ্ছি।বে আব্রু সৌন্দর্যে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। বেশীক্ষন চাইতে পারিনা চোখ সরিয়ে নেই সম্মুখের বিবর্ন ঘাসের দিকে।এইতো ক’দিন আগে দেশে থাকত, কোন তরুনীর আধা ফর্সা পায়ের গোছা,উন্মুক্ত গ্রীবা কিংবা নগ্ন সুগোল বাহু দেখে যেই আমি আদিম রসের আস্বাদ নিতাম সেই আমি যে এমন রুপবতীদের অর্ধনগ্ন শরিরের তীক্ষ চাবুকের আঘাতে ধরাশায়ী হব তাতে আশ্চর্য হবার কি আছে!কিছু বাদে পরিবেশ যখন কিছুটা সহনীয় হয়ে এল-যুবকের চোখে তখন দুঃসাহসিক এডভেঞ্চারের সপ্ন। নদীটা চওড়া হবে সাকুল্যে শ’খানেক হাত।তেমন স্রোত নেই ঢেউতো নেই-ই।অতি শান্ত নদী। কিন্তু আশ্চর্য কাউকে দেখলাম না সেখানে ঝাঁপ দিয়ে দু চার ল্যাপ সাতরাতে।পদ্মার পাড়ের ছেলে আমি। ভাল করে হাটার আগে সাঁতার শিখেছি।ভাবলাম যাই ওদের একটু দেখিয়ে দেই-নদীতে কি করে সাঁতার কাটতে হয়। সবে মাত্র সামার এসেছে রোদের তেজ তেমন নেই তখন। উল্টো আকাশে মেঘের আনাগোনা-বাতাসে একটু শীতল অনুভুতি। তবুও ভাবতে ভাবতে নেমে পড়লাম পানিতে। ওরে বাব্বা! কি ঠান্ডরে বাবা! মনে হচ্ছে বরফ গলা জল। নেমে যখন পড়েছি ফেরার আর পথ নাই। হাটু পানিতে নামতেই টের পেলাম শরিরে সুক্ষ কাঁপনের ঢেউ। যা থাকে কপালে! দিলাম ঝাঁপ। কিন্তু একটু এগুতেই দেখি একি! আমার সমান্তরালে একজোড়া সুদৃঢ় সুগোল ফর্সা হাতের সঞ্চালন। ভাল করে নজর বুলিয়ে দেখি অতি রুপবতী এক রমণী। আমাকে দেখে তারও সাতারের খায়েস হয়েছে। ওকে দেখে আরো উৎসাহিত হলাম সাথে আতংকিতও। এমেয়েতো আমার পুকুর কিংবা ডোবাতে টুপ টুপ ডুপ ঢুপ করে পদ সঞ্চালন দ্বারা সাতরে বেড়ানো আমাদের অধিকাংশ বঙ্গ ললনার মত না। এ দেখি আমারই মত দীর্ঘ দু বাহু প্রসারিত করে প্রফেশনাল সাতারুর মত জল কেটে এগিয়ে যাচ্ছে। খেয়েছে রে! মেয়েদের কাছে সাতারে হার। আমার পদ্মার ইজ্জত যাবে যে! এতক্ষন ধীরালয়ে সাতরালেও এবার চোখ কান বুজে দিলাম জোর সাতার।ফিরতি পথে নিদারুন কষ্ট হলেও পদ্মার মান রেখেছিলাম। এপাড়ে দুয়েকজন হাত তালিও দিল।পাড় বেয়ে উঠে এগিয়ে গেলাম বেশ বড় একখান ছাতার নীচে গোলাকার বেঞ্চটা লক্ষ্য করে।একটু শীত শীত করছিল তখনো।শরিরে তির-তির করে মৃদু কাঁপন।বেঞ্চিতে বসতেই আচমকা ধেয়ে এল বৃষ্টি।আশে পাশে যারা ছিল সবাই তাদের বিছিয়ে রাখা তোয়ালে খানা কোনমতে নিম্নাংগেজড়িয়ে ধেয়ে এল আমার পানে মানে,আমি যেখানটায় আছি সেই ছাতার নীচে।কয়েকজন সিট পেয়েছে বাকি সবাই দাড়িয়ে। আমার চারপাশে গা ঘেষাঘেষি করে দাড়িয়ে আছে বেশ ক’জন রুশ ললনা। নাকের কাছে সৌন্দর্যের ঘ্রান।দ্বীধাহীন ভাবে বলতে হয় সেই আমার বয়সে তখন সেরকম শুধু কল্পনাতেই মানায় –বাস্তবে এমন হওয়া সম্ভব বলে মনে করিনি কখনো। কত সুখ কল্পনায় বেসে যাচ্চিলাম তখন।বিধাতা বড় নিঃরস! ভেজা গা তখনো শুকোয়নি। প্রথমে একটু একটু করে মিনিট খানেক যেতে না যেতেই শুরু হল কাঁপুনি। সেকি কাপুনি আর খিচুনি!চারিদিকে অন্ধকার দেখছি তখন-মনে হচ্ছে কেউ আমাকে বরফের গর্তে ঠেসে ধরেছে।আমার কাপুনি দেখে প্রথমে শুরু হল মৃদু গুঞ্জন পরক্ষনেই হট্ট্রগোল।শুনতে পেলাম বহু রমনী কন্ঠে -ও বজ্বা মোই!ও বজ্বা মোই!স্তো উসতাবোই?ও ঈশ্বর!ও ঈশ্বর আমার! কি হয়েছে তোমার?আমার দুবস্থা ঠাহর করতে পেরে তিন চারটে মেয়ে এক সাথে তাদের কটি থেকে একটানে তোয়ালে খুলে চেপে ধরল আমাকে। আর দু তিনজন আমার হাত পা ম্যাসেজ করতে শুরু করে দিল।মিনিট দশেক লাগল ধাতস্ত হতে। বিব্রত লাজুক চোখ মেলে চাইলাম আমি। সম্মুখ থেকে উধাও যৌন আবেদনময়ী অর্ধ উলংঙ্গ অতি সুন্দরীদের ক্ষীন কটিদেশ শ্বেতশুভ্র সুঠাম উরু।আমার সামনে যেন মমতাময়ীর স্নিগ্ধ দৃষ্টি নিয়ে দাড়িয়ে আছে অতিআপন কিছু প্রিয় মুখ।ছবি: সেই Tsna নদী তাম্বুভ,রাশিয়া।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
চমতকার !!!
উত্তরমুছুনশেষটা খুব মজার
উত্তরমুছুন